
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গাজীপুরে কাশিমপুর থানার অন্তর্গত ১নং ওয়ার্ডের পানিশাইল এলাকায় অবস্থিত তুরাগ গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষের জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে বেতন বৈষম্য ও চাকরি থেকে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে অংশ নেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শ্রমিক ও স্টাফদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়, এতে কয়েকজন শ্রমিক প্রতিনিধি ও স্টাফ গুরুতর আহত হন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শ্রমিকদের অভিযোগ ও দাবিসমূহঃ
শ্রমিকদের দাবি—বিনা কারণে ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে, অন্যথায় তাদের পুনরায় কাজে যোগদানের অনুমতি দিতে হবে। আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে কোনো শ্রমিককে প্রমাণ ছাড়া ছাঁটাই করা যাবে না। মালিক পক্ষ পূর্বে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিনা কারণে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই হবে না, কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই না করার বিষয়ে লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে। শোকজ বাণিজ্যে জড়িত অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাকরিচ্যুত করতে হবে। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বেতন নির্ধারণের প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করায় শ্রমিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মালিক পক্ষের বক্তব্যঃ এ বিষয়ে মালিক পক্ষের এক কর্মকর্তা জানান, “আমরা শ্রম আইনের পরিপন্থী কোনো পদক্ষেপ নেইনি। শ্রমিকদের অনেকেই শ্রম আইনের ২৩ ধারার ৪ উপধারার অধীনে কোনো বেনিফিট পাওয়ার যোগ্য নন, অথচ তারা ২৬ ধারার বেনিফিট দাবি করছেন। তবুও যেসব শ্রমিক আইন অনুযায়ী পাওনাদির অধিকারী, তাদের সকল পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কিছু শ্রমিক অসৎ উদ্দেশ্যে কারখানার স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিল, যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর রয়েছে। শ্রমিকদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।